The news is by your side.

ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৫, কি কি লাগে ও খরচ কত টাকা লাগে

অনলাইনে আবেদন থেকে হাতে পাওয়া পর্যন্ত সব তথ্য, ভুল সংশোধনের সুযোগ নেই।

1

ই পাসপোর্ট করার নিয়ম: সালে নতুন ই-পাসপোর্ট করতে চান বা রিনিউ করতে চান? এই আর্টিকেলে ধাপে ধাপে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, খরচ ও সময়সীমা সম্পর্কে সব তথ্য দেওয়া হয়েছে।

ই পাসপোর্ট করার নিয়ম, কি কি লাগে ও খরচ কত টাকা লাগে

বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ই-পাসপোর্ট এখন একটি বাস্তবতা। বিশ্বের ১১৯তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এখন ইলেকট্রনিক বা ই-পাসপোর্টের যুগে প্রবেশ করেছে। এটি আমাদের জন্য একটি নতুন এবং উন্নত অভিজ্ঞতা। তবে অনেকেই এই নতুন ব্যবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত জানেন না, যার ফলে সামান্য ভুলেও তাদের আবেদন বাতিল হয়ে যায়। একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, একটি জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) দিয়ে শুধুমাত্র একবারই ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা যায় এবং আবেদন জমা দেওয়ার (সাবমিট) পর কোনো ভুল সংশোধন করার সুযোগ থাকে না। তাই ই-পাসপোর্ট করার নিয়মকানুন, কি কি লাগে এবং খরচ কত, তা ভালোভাবে জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

এই লেখায় আমরা ২০২৫ সালের নতুন নিয়ম অনুযায়ী ই পাসপোর্ট করার নিয়ম নিয়ে একটি সম্পূর্ণ গাইডলাইন দেব, যাতে আপনি ঘরে বসেই নির্ভুলভাবে আপনার আবেদন সম্পন্ন করতে পারেন।

ধাপে ধাপে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৫

ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা এখন অনেকটাই সহজ এবং ডিজিটাল। নিচে ধাপে ধাপে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও পুরো প্রক্রিয়াটি তুলে ধরা হলো:

ধাপ ১: অনলাইনে আবেদন শুরু করা

প্রথমেই আপনাকে বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট অনলাইন পোর্টালে (www.epassport.gov.bd) যেতে হবে। এটিই আপনার আবেদনের প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে ‘Apply Online for e-Passport/Re-issue’ বাটনে ক্লিক করুন। শুরুতেই আপনাকে বর্তমান ঠিকানা অনুযায়ী আপনার জেলা এবং থানার নাম নির্বাচন করতে হবে।

ধাপ ২: ব্যক্তিগত তথ্য ও ফরম পূরণ

অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করুন। প্রথমে আপনার ইমেইল দিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন। মনে রাখবেন, এই ইমেইলে আপনার সব গুরুত্বপূর্ণ আপডেট আসবে। ব্যক্তিগত তথ্য যেমন নাম, জন্মতারিখ, পেশা, ঠিকানা ইত্যাদি আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) বা জন্মনিবন্ধন সনদ অনুযায়ী নির্ভুলভাবে পূরণ করুন। পাসপোর্টের ধরণ, মেয়াদ (৫ বা ১০ বছর) এবং পৃষ্ঠার সংখ্যা (৪৮ বা ৬৪) নির্বাচন করুন।

ধাপ ৩: পাসপোর্ট ফি পরিশোধ

আবেদন ফরম পূরণ শেষ হলে আপনাকে পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করতে হবে। ই পাসপোর্ট খরচ কত তা নির্ভর করে আপনার নির্বাচিত ডেলিভারি পদ্ধতি এবং পাসপোর্টের ধরন অনুযায়ী। অনলাইনে যেকোনো ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে সরাসরি ফি জমা দিতে পারেন। এছাড়াও, অনুমোদিত কয়েকটি ব্যাংক যেমন সোনালী ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ঢাকা ব্যাংক ইত্যাদির শাখায় গিয়ে টাকা জমা দিয়ে সেই জমা স্লিপের নম্বরটি অনলাইন পোর্টালে যোগ করার সুযোগও রয়েছে। ফি পরিশোধের পর পেমেন্ট স্লিপটি যত্ন করে প্রিন্ট করে রাখুন।

ধাপ ৪: অ্যাপয়েন্টমেন্ট ও কাগজপত্র প্রস্তুতি

ফি পরিশোধের পর আপনাকে একটি নির্দিষ্ট তারিখে পাসপোর্ট অফিসে বায়োমেট্রিক তথ্য (ছবি, আঙুলের ছাপ) দেওয়ার জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে। অনলাইন ফরমেই অ্যাপয়েন্টমেন্টের তারিখ এবং সময় নির্ধারণের অপশন থাকে। আপনার সুবিধামতো তারিখ ও সময় বেছে নিন। নির্ধারিত তারিখের জন্য প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র প্রস্তুত করুন।

ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে?

যথাযথ কাগজপত্রের অভাবে যেন আপনার আবেদন বাতিল না হয়, সেজন্য নিচের তালিকাটি দেখে নিন:

  • প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য: আবেদন ফরমের প্রিন্ট করা কপি, অনলাইনে ফি পরিশোধের রসিদ, মূল জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) এবং তার ফটোকপি, ঠিকানা প্রমাণ করার জন্য সাম্প্রতিক বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি।
  • ১৮ বছরের কম বয়সীদের জন্য: জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট (জন্মসনদ), বাবা-মায়ের NID-এর ফটোকপি এবং উপরে উল্লেখিত অন্যান্য সব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।

ধাপ ৫: পাসপোর্ট অফিসে বায়োমেট্রিক এবং আইরিশ স্ক্যান

অ্যাপয়েন্টমেন্টের নির্ধারিত তারিখে, আপনার প্রস্তুত করা সব কাগজপত্র নিয়ে পাসপোর্ট অফিসে যান। আপনার কাগজপত্র যাচাই করা হবে। এরপর আপনার ছবি তোলা, ১০ আঙুলের ছাপ (Fingerprint) এবং চোখের আইরিশ স্ক্যান (Iris Scan) নেওয়া হবে। সব প্রক্রিয়া শেষ হলে আপনাকে পাসপোর্ট সংগ্রহের জন্য একটি ডেলিভারি রসিদ দেওয়া হবে।

ই-পাসপোর্টের খরচ কত টাকা লাগে?

২০২৫ সালের নিয়ম অনুযায়ী, ই-পাসপোর্টের খরচ নির্ভর করে পাসপোর্টের মেয়াদ, পৃষ্ঠার সংখ্যা এবং ডেলিভারির ধরনের উপর। সকল ফির সাথে ১৫% ভ্যাট যুক্ত হবে।

৪৮ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট (৫ বছর মেয়াদি):

  • সাধারণ (২১ কার্যদিবস) ফি: ৪,০২৫ টাকা
  • জরুরি (১০ কার্যদিবস) ফি: ৬,৩২৫ টাকা
  • অতীব জরুরি (২ কার্যদিবস) ফি: ৮,৬২৫ টাকা

৪৮ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট (১০ বছর মেয়াদি)

  • সাধারণ ফি: ৫,৭৫০ টাকা
  • জরুরি ফি: ৮,০৫০ টাকা
  • অতীব জরুরি ফি: ১০,৩৫০ টাকা

৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট (৫ বছর মেয়াদি)

  • সাধারণ ফি: ৬,৩২৫ টাকা
  • জরুরি ফি: ৮,৬২৫ টাকা
  • অতীব জরুরি ফি: ১২,০৭৫ টাকা

৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট (১০ বছর মেয়াদি)

  • সাধারণ ফি: ৮,০৫০ টাকা
  • জরুরি ফি: ১০,৩৫০ টাকা
  • অতীব জরুরি ফি: ১৩,৮০০ টাকা

গুরুত্বপূর্ণ দ্রষ্টব্য: ১৮ বছরের কম এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সী আবেদনকারীরা শুধুমাত্র ৫ বছর মেয়াদের পাসপোর্ট পাবেন। অতি জরুরি আবেদনের ক্ষেত্রে পুলিশ প্রতিবেদন সঙ্গে করে আনতে হবে।

ই-পাসপোর্টের সুবিধা

ই-পাসপোর্টের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, এর মাধ্যমে ই-গেট ব্যবহার করে খুব দ্রুত ও সহজে ভ্রমণকারীরা ইমিগ্রেশন পার হতে পারবেন। এতে ভিসা চেকিংয়ের জন্য লাইনে দাঁড়ানোর প্রয়োজন হবে না। ই-গেটের নির্দিষ্ট স্থানে পাসপোর্ট রেখে দাঁড়ালে ক্যামেরা ছবি তুলে নেবে এবং আঙুলের ছাপ যাচাই করবে। সবকিছু ঠিক থাকলে ইমিগ্রেশন পার হওয়া যাবে। কোনো গরমিল থাকলে জ্বলে উঠবে লালবাতি।

ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৫ অনুযায়ী আবেদন প্রক্রিয়াটি এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি গোছানো এবং নিরাপদ। তবে মনে রাখতে হবে, আবেদন করার সময় সামান্য ভুলও আপনার জন্য বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই এই গাইডে দেওয়া নিয়মগুলো অনুসরণ করে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ই পাসপোর্ট খরচ কত তা ভালোভাবে জেনে আপনি খুব সহজেই আপনার ই-পাসপোর্টটি পেয়ে যাবেন।

সম্পর্কিত আর্টিকেলকত বছর বয়স পর্যন্ত অনার্সে ভর্তি হওয়া যায়: বিস্তারিত গাইড

Leave A Reply

Your email address will not be published.